নাছির হোসাইনঃ দাবিকৃত ভাড়া আদায়ের অনুমোদন না পেলেও ২৪ ঘন্টা পর পাবনার বেড়া উপজেলার কাজিরহাট ও মানিকগঞ্জের আরিচা নৌপথে দ্রুতগতির স্পিডবোট সেবা চালু হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) সকাল দশটার থেকে সরকার নির্ধারিত ২১০ টাকা ভাড়াতেই বোট চালু করেছে মালিক পক্ষ। এর আগে ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা ভাড়া আদায়ের দাবিতে মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল থেকে বোট বন্ধ রাখে মালিকরা। এতে এদিন লঞ্চ ও ফেরীতেই পারাপার হন ঈদে ঘরে ফেরা মানুষগুলো। স্পিডবোট নিয়ে পাবনা নিউজ এ ধারাবাহিকভাবে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ এর নগরবাড়ি-কাজিরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল। তিনি জানান, বোট বন্ধের পর বিআইডব্লিউটিএ ও স্থানীয় প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টরা মালিকদের সাথে দফায় দফায় আলাপ করি। প্রজ্ঞাপনের বাইরে গিয়ে ভাড়া বাড়ানোর কোনোরকম সুযোগ নেই – এবিষয়টি তাদের বুঝাতে চেষ্টা করি। এক্ষেত্রে ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা হাজার হাজার যাত্রীর ভোগান্তির বিষয়টি নিয়েও আলাপ হয়। এরপর আজ সকালে তারা সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২১০ টাকাতেই বোট চালানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা।
গত ২৯ মে বেড়া উপজেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা নির্ধারণকৃত ভাড়া ও ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে এই নৌপথের শৃঙ্খলা ফেরাতে ও যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ঠ সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এর পরদিনই ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা করে ভাড়া আদায়ের অনুমোদন না দেয়া হলে স্পিডবোট বন্ধ রাখা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বোট মালিকপক্ষ।
এর পর গত ২ জুন ফের পাবনা নিউজ এ “কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে স্পিডবোটের ৩শত টাকা ভাড়ার অনুমোদন না পেলে বন্ধের হুশিয়ারি” শিরোনামে আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ ছাড়াও ৪ জুন ‘‘কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে ৩০০ টাকা ভাড়ার দাবিতে বন্ধ করলেন স্পিডবোট’’ শিরোনামে আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে ব্যপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় এর পর তোপের মুখে চালু করতে বাধ্য হয় তারা। মূলত এ চাপের মুখে পড়েই ২৪ ঘন্টা পর পুনরায় বোট চালানোর সিদ্ধান্ত নেন মালিকরা।
এব্যাপারে বোট মালিক সমিতির সভাপতি ও বেড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন জানান,আমরা এখনো বলছি ঈদযাত্রায় এই ভাড়ায় আমাদের লোকসান হবে। এজন্যই আমরা ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটি কর্ণপাতই করেননি। সবশেষ লোকসান হলেও ঈদে মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বোট চলবে।
ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে একদিন বোট বন্ধ রাখলেন, সেটি তো বাড়েনি। তবে হঠাৎ আবার চালানোর সিদ্ধান্ত আসলে কোথা থেকে এলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গতকালও বলেছি, বোট মালিক সমিতি বন্ধ করে নাই। মালিকরা নিজেই বন্ধ রেখেছিলেন। তাছাড়া আবহাওয়াও ভালো ছিলো না। কিন্তু একদিন বন্ধ থাকায় মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি আমাদের নজরে ভিন্নভাবে এসেছে। তাই লোকসান হলেও ঈদের এসময় বোট চলার ব্যাপারে মালিকদের সাথে দফায় দফায় বসি এবং বিষয়টি বুঝাতে চেষ্টা করি। ইতোমধ্যে বোট চলছে। আবহাওয়া ভালো থাকলেও স্বাভাবিকভাবেই চলবে।