নাছির হোসাইন: পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার সিন্দুরিয়া গ্রামে পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো ছয়টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধসহ সেগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে দিনব্যাপী চলে এ অভিযান। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাসহ পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, সিন্দুরিয়া গ্রামে উপজেলার প্রভাবশালীরা একজোট হয়ে ছয়টি ইটভাটা গড়ে তুলেছিলেন। সেগুলো হলো- মাস্টার্স ব্রিকস, রাকা ব্রিকস, সততা, সততা প্লাস, একতা ও ম-ল ভাটা। এসব ইটভাটার কোনো অনুমোদন নেই। শুধু পেশিশক্তি ও রাজনৈতিক আশ্রয়ের জোরে সাত-আট বছর ধরে টিকেছিল ইটভাটাগুলো। এমনকি ভাটাগুলো গড়তে এর আশেপাশের সাধারণ গ্রামবাসীর প্রায় ৫০ বিঘা কৃষিজমি দখল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ভাটাগুলোর কারণে সিন্দুরিয়াসহ আশেপাশের চার-পাঁচটি গ্রামের ফসল উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। আম, কলা, লিচুসহ বিভিন্ন ফলের গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছিল এবং এগুলোর ফল কচি অবস্থাতেই কালো হয়ে শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছিল। এলাকাবাসী শ^াসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকগুলোতে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে বার বার অভিযোগ দিলেও এতদিন বন্ধ হয়নি এসব অবৈধ ভাটা।
অবশেষে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সিন্দুরিয়া গ্রামে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধসহ সেগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। এতে উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ভাটার চুলায় পানি দিয়ে প্রথমে আগুন নিভিয়ে দেয়। পরে বুলডোজার ও বেকু দিয়ে অবৈধ ছয়টি ইটভাটার চিমনিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ান-উল ইসলাম, পাবনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুর, পরিদর্শক আব্দুল মোমিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।